স্বজন হারানোর বেদনা সবসময়ই অসহনীয়। আর সেই স্বজন যদি হয় নিজের ছোট ভাই, তবে সে ক্ষত আরও গভীর, আরও ব্যক্তিগত। ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর জীবনে নেমে এসেছে এমনই শোকের ছায়া। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তার ছোট ভাই অমিতাভ চক্রবর্তী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
ছেলেবেলা থেকে একসাথে বড় হওয়া, খেলা, খাওয়া, ঘুম—ভাইয়ের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তেই জড়িয়ে আছে চিরঞ্জিতের জীবনের শ্রেষ্ঠ স্মৃতিগুলো। সেই অতীত আজ ভেঙে দিয়েছে হঠাৎ থেমে যাওয়া হৃদস্পন্দন। গভীর বিষাদে ডুবে গিয়ে চিরঞ্জিত গণমাধ্যমকে বলেন, “আমার থেকে ছ’ বছরের ছোট ও। চলে যাওয়ার মতো তো কিছুই হয়নি ওর। খালি মনে হচ্ছে মাকে দেখেছি ওকে কোলে করে বাড়ি নিয়ে আসতে। এত সুন্দর সময় কাটানোর পর ওকে শ্মশানেও পাঠাতে হলো আমায়। এটা তো দাদা হিসেবে আমার দুর্ভাগ্য।”
চিরঞ্জিত জানান, কিছুদিন আগেই বুকে সামান্য ব্যথা অনুভব করেছিলেন অমিতাভ। চিকিৎসকের পরামর্শে ইসিজি করানো হলেও রিপোর্টে কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। ডাক্তার ইকো করার পরামর্শ দিলেও তা আর করাননি তিনি। চিরঞ্জিতের কণ্ঠে আক্ষেপ— “ও বলেছিল, আমি তো ঠিক আছি একদম, কেন টেস্ট করাব। আর সেটাই সর্বনাশ ডেকে আনল।”
মৃত্যুর দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, অনেক দিন পর নাকি ভালো ঘুম হয়েছে। আর এটাই ছিল তার শেষ কথা। এরপর মুহূর্তেই সব শেষ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।
চিরঞ্জিত বলেন, “ওর জন্য হয়তো এভাবে চলে যাওয়াটা খুব শান্তিপূর্ণ। কিন্তু আমাদের জন্য এটা ভীষণ কষ্টকর।”
অমিতাভ চক্রবর্তীর এই হঠাৎ চলে যাওয়া শুধু একটি পরিবারের নয়, একজন ভাইয়ের হৃদয়ের গভীরে এক শূন্যতা গেঁথে দিয়ে গেল চিরদিনের মতো।